প্রত্যাশার বেলুনটা হাওয়ায় উড়ছিল সিরিজ শুরুর আগে থেকেই। সে বেলুন আরো
উঁচুতে উঠে গেছে সাহারা কাপ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টানা জয়ের পর। সে
কারণেই নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়ামে রোববারের ম্যাচের আগে জয় পাওয়ার প্রত্যাশা
পরিণত হয়েছিলো প্রতিজ্ঞায়। ফলে প্রতিজ্ঞা পূরণের প্রত্যয়ে দৃঢ় বাংলাদেশ ৩০৭ রানের
পাহাড়ও টপকে গেলো অনায়াসে। প্রতিজ্ঞা ছিলো বলেই হয়তো বোলারদের ব্যর্থতার দিনে দলকে
জোট বেধে জেতালেন ব্যাটসম্যানরা। যাতে সিংহভাগ সময় ম্যাচ জেতানোর কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ
করা হলো বোলারদের প্রতি!
সিরিজের
শেষ ম্যাচে শান্ত্বনার জয়ের আশা ছিলো কিউইদের। কিন্তু তা তুলে নিতে ব্যর্থ হলো
নিউজিল্যান্ড। ২০১০ সালে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার বদলা নেওয়ার সফরে উল্টো
আবার ‘ধবলধোলাই’ হলো তারা। প্রথম দুই ম্যাচ আগেই হেরে বসা
নিউজিল্যান্ডের সামনে সুযোগ এসেছিল শেষ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয়খরা
কাটানোর। কিন্তু পারলো না কিউইরা। ৩০৭ রানের পাহাড়ও বাংলাদেশের কাছে হার মানা থেকে
বাঁচিয়ে রাখতে পারলো না তাদের। আসলে এই বাংলাদেশ এতোটাই পরাক্রমশালী হয়ে উঠেছে যে,
নিউজিল্যান্ডের
পক্ষে যেনো তাদের হারানোটা অসম্ভবই হয়ে গেছে!
বাংলাদেশের কাছে টানা সপ্তম হারের দিন সকালটা ভালোই ছিলো কিউইদের। ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশকে চোখ রাঙানিই দিচ্ছিল তারা। বারবার বোলার বদল করেও কিউই ব্যাটসম্যানদের থামাতে পারছিলেন না মুশফিক। ওপেনিং জুটিতেই ৬৬ রান তুলে ফেলে কিউইরা। ওয়ানডে সিরিজে এটিই তাদের সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং জুটি। বাংলাদেশ জিতবে প্রভাব খাটিয়ে; এমন পাণ্ডুলিপি তৈরি করা ছিলো সৃষ্টিকর্তার। এ জন্যই হয়তো আগের দুই ম্যাচের সেরা বোলাররা আজ রানই আটকে রাখতে পারলেন না। অন্য ম্যাচের তুলনায় উইকেটও পড়লো খুব ধীরে।
নিভে যাওয়ার ঠিক আগে যেভাবে প্রদীপ হঠাৎ জ্বলে উঠে, ঠিক তেমনিই নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং লাইন রান তুললো অনেক। ৩০৭ রানকে এখন ‘অনেক’ বলাটা উচিত না হলেও; বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তা যদি নিউজিল্যান্ড করে, তবে তা অনেকই! এই অনেক রান করার পথে সবচেয়ে বেশি ধকলটা গেলো মাশরাফির উপর দিয়ে। আট ওভার বোলিং করে ৭৩ দিতে হয়েছে দেশসেরা এই পেসারকে। কিউইদের দারুণ একটি সেঞ্চুরি করেছেন রস টেলর।
নিউজিল্যান্ডের পাঁচ উইকেটের দু’টি নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন রুবেল, সোহাগ ও রাজ্জাক।
ম্যাচে এবং পুরো সিরিজেই নিউজিল্যান্ডের গল্প এতোটুকুই। তারপর কেবল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কার। ৩০৮ রান তো আর এমনি এমনি আসে না!
ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কারে নেতৃত্ব দিলেন সদ্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তপ্ত আঙিনায় পা ফেলা শামসুর রহমান। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচেই সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। আউট হয়েছেন ৯৬ রানে। তবে আউট হওয়ার আগে জানান দিয়ে গেছেন ভবিষ্যতে কী করবেন তিনি! ৯৬ রানের ইনিংসে শামসুর চার মেরেছেন সাতটি আর ছয় মেরেছেন চারটি। তামিমের যোগ্য সঙ্গীর অভাব পূরণ করতে যে তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত তাতে আর সন্দেহ থাকার কথা নয়।
শামসুরের মারকাটারি ব্যাটিং প্রদর্শনীর আগে মৃদু ঝড় উঠিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ২০ বলে ২২ রান করেছেন তিনি। তাতে ছয় ও চার দু’টি করে। জিয়ার ইনিংসটি বড় হতে পারতো আরো, যদি না তার সর্বশক্তি দিয়ে মারা শটগুলো মিস না হতো!
জিয়ার শট মিসের কথা বেশিক্ষণ মনে রাখতে দেননি শামসুর, সাবলিল ব্যাটিং করে কিউই বোলারদের দৃষ্টিসীমার খুব কাছে নিয়ে এসেছিলেন সর্ষে ফুল। যার হলুদাভ ছায়া রঙ ছাড়িয়ে আর ভালো বোলিং করতে পারেনি কিউই বোলাররা। ফলে বাংলাদেশের বোর্ডও থমকে যায়নি কখনো। এমনকি মুশফিকদের ব্যাটিংয়ের সময় একটিবারের জন্যও আজ মনে হয়নি- জিততে পারে নিউজিল্যান্ড!
জিয়ার আউটের পর ৩৩ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে গেছেন মুমিনুল। তারপর মুশফিক দ্রুত আউট হয়ে গেলেও তা বুঝতে দেননি নাঈম। শামসুরকে সাথে নিয়ে সচল রেখেছেন রানের চাকা। জয়ের জন্য চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা ব্যাটসম্যানরা যে করেছিলেন তা সুস্পষ্ট হয়েছে এতেই।
৭৪ বলে ৬৩ রানের কার্যকর এক ইনিংস খেলে নাঈম আউট হয়ে গেলে কিছুটা দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছিলো সমর্থকদের কপালে। যা ব্যাটের দ্যূতিতে নিমিষেই মুছে দিয়েছেন নাসির ও পরিক্ষীত যোদ্ধা রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে এ দু’জনের জুটি বাংলাদেশকে ভিড়িয়ে দিয়েছে স্বপ্ন-জয়ের মায়াবী বন্দরে; তবে নোঙর ফেলতে পারেনি। স্কুইপ প্যাডল করতে গিয়ে কিপারের হাতে ধরা পড়েছেন রিয়াদ। ১৩ বলে ১৬ রান করে আউট হয়েছেন তিনি।
ফলে শেষ কাজটি করার জন্য নামতে হয়েছে সোহাগ গাজীকে। নাসিরকে সাথে নিয়ে জয়ের তরীর নোঙর ফেলেছেন তিনি পাহাড়সম প্রত্যাশার ভার কাঁধে নিয়ে।
সাথে সাথেই বাধভাঙা খুশির ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে ফতুল্লা স্টেডিয়ামের জনসমুদ্রে। শীতলক্ষ্যা পাড়ের শহর পেরিয়ে যা মুহুর্তেই ছড়িয়ে গেছে কোটি বাংলাদেশির হৃদয়-সাগরে। গত ম্যাচ শেষে মিরপুরে দেখতে ম্লান হওয়া ইউনিয়ন-জ্যাক খচিত কিউই পতাকা ফতুল্লায় এ দিন একেবারেই অদৃশ্য!
একেই বলে জয়ের প্রভাব!
বাংলাদেশের কাছে টানা সপ্তম হারের দিন সকালটা ভালোই ছিলো কিউইদের। ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশকে চোখ রাঙানিই দিচ্ছিল তারা। বারবার বোলার বদল করেও কিউই ব্যাটসম্যানদের থামাতে পারছিলেন না মুশফিক। ওপেনিং জুটিতেই ৬৬ রান তুলে ফেলে কিউইরা। ওয়ানডে সিরিজে এটিই তাদের সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং জুটি। বাংলাদেশ জিতবে প্রভাব খাটিয়ে; এমন পাণ্ডুলিপি তৈরি করা ছিলো সৃষ্টিকর্তার। এ জন্যই হয়তো আগের দুই ম্যাচের সেরা বোলাররা আজ রানই আটকে রাখতে পারলেন না। অন্য ম্যাচের তুলনায় উইকেটও পড়লো খুব ধীরে।
নিভে যাওয়ার ঠিক আগে যেভাবে প্রদীপ হঠাৎ জ্বলে উঠে, ঠিক তেমনিই নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং লাইন রান তুললো অনেক। ৩০৭ রানকে এখন ‘অনেক’ বলাটা উচিত না হলেও; বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তা যদি নিউজিল্যান্ড করে, তবে তা অনেকই! এই অনেক রান করার পথে সবচেয়ে বেশি ধকলটা গেলো মাশরাফির উপর দিয়ে। আট ওভার বোলিং করে ৭৩ দিতে হয়েছে দেশসেরা এই পেসারকে। কিউইদের দারুণ একটি সেঞ্চুরি করেছেন রস টেলর।
নিউজিল্যান্ডের পাঁচ উইকেটের দু’টি নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন রুবেল, সোহাগ ও রাজ্জাক।
ম্যাচে এবং পুরো সিরিজেই নিউজিল্যান্ডের গল্প এতোটুকুই। তারপর কেবল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কার। ৩০৮ রান তো আর এমনি এমনি আসে না!
ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কারে নেতৃত্ব দিলেন সদ্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তপ্ত আঙিনায় পা ফেলা শামসুর রহমান। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচেই সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। আউট হয়েছেন ৯৬ রানে। তবে আউট হওয়ার আগে জানান দিয়ে গেছেন ভবিষ্যতে কী করবেন তিনি! ৯৬ রানের ইনিংসে শামসুর চার মেরেছেন সাতটি আর ছয় মেরেছেন চারটি। তামিমের যোগ্য সঙ্গীর অভাব পূরণ করতে যে তিনি পুরোপুরি প্রস্তুত তাতে আর সন্দেহ থাকার কথা নয়।
শামসুরের মারকাটারি ব্যাটিং প্রদর্শনীর আগে মৃদু ঝড় উঠিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ২০ বলে ২২ রান করেছেন তিনি। তাতে ছয় ও চার দু’টি করে। জিয়ার ইনিংসটি বড় হতে পারতো আরো, যদি না তার সর্বশক্তি দিয়ে মারা শটগুলো মিস না হতো!
জিয়ার শট মিসের কথা বেশিক্ষণ মনে রাখতে দেননি শামসুর, সাবলিল ব্যাটিং করে কিউই বোলারদের দৃষ্টিসীমার খুব কাছে নিয়ে এসেছিলেন সর্ষে ফুল। যার হলুদাভ ছায়া রঙ ছাড়িয়ে আর ভালো বোলিং করতে পারেনি কিউই বোলাররা। ফলে বাংলাদেশের বোর্ডও থমকে যায়নি কখনো। এমনকি মুশফিকদের ব্যাটিংয়ের সময় একটিবারের জন্যও আজ মনে হয়নি- জিততে পারে নিউজিল্যান্ড!
জিয়ার আউটের পর ৩৩ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে গেছেন মুমিনুল। তারপর মুশফিক দ্রুত আউট হয়ে গেলেও তা বুঝতে দেননি নাঈম। শামসুরকে সাথে নিয়ে সচল রেখেছেন রানের চাকা। জয়ের জন্য চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা ব্যাটসম্যানরা যে করেছিলেন তা সুস্পষ্ট হয়েছে এতেই।
৭৪ বলে ৬৩ রানের কার্যকর এক ইনিংস খেলে নাঈম আউট হয়ে গেলে কিছুটা দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছিলো সমর্থকদের কপালে। যা ব্যাটের দ্যূতিতে নিমিষেই মুছে দিয়েছেন নাসির ও পরিক্ষীত যোদ্ধা রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে এ দু’জনের জুটি বাংলাদেশকে ভিড়িয়ে দিয়েছে স্বপ্ন-জয়ের মায়াবী বন্দরে; তবে নোঙর ফেলতে পারেনি। স্কুইপ প্যাডল করতে গিয়ে কিপারের হাতে ধরা পড়েছেন রিয়াদ। ১৩ বলে ১৬ রান করে আউট হয়েছেন তিনি।
ফলে শেষ কাজটি করার জন্য নামতে হয়েছে সোহাগ গাজীকে। নাসিরকে সাথে নিয়ে জয়ের তরীর নোঙর ফেলেছেন তিনি পাহাড়সম প্রত্যাশার ভার কাঁধে নিয়ে।
সাথে সাথেই বাধভাঙা খুশির ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে ফতুল্লা স্টেডিয়ামের জনসমুদ্রে। শীতলক্ষ্যা পাড়ের শহর পেরিয়ে যা মুহুর্তেই ছড়িয়ে গেছে কোটি বাংলাদেশির হৃদয়-সাগরে। গত ম্যাচ শেষে মিরপুরে দেখতে ম্লান হওয়া ইউনিয়ন-জ্যাক খচিত কিউই পতাকা ফতুল্লায় এ দিন একেবারেই অদৃশ্য!
একেই বলে জয়ের প্রভাব!
Comments
Post a Comment