তোমাকে জানি না


তোমাকে হয়তো চিনি ঠিকই, কিন্তু

তোমাকে জানি না। যে তোমাকে চিনি,
সে একটা দুরূহ কবিতা, অভিধান
খুলে আমি যার একটা একটা শব্দ
ধরার চেষ্টা করি। একটু আধটু বুঝি;
আর যে তোমাকে আমি জানি না,
সে একটা অদেখা- অচেনা ভাষার
দুর্বোধ্য একেকটা হরফের সমন্বয়।

এই যৎসামান্য চেনা এবং অজানা
তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি-
না তোমাকে দেখি, না নিজেকে খুঁজে
পাই। তুমি এমনই এক দুর্ভেদ্য রহস্য,
তুমি এমনই অনতিক্রম্য পর্বত-চূড়া,
তুমি এমনই এক দুর্গম গিরিখাদ।

স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি করে
হাতটা বাড়ালেই তোমাকে পাওয়া যায়,
স্পর্শ করা যায় তোমার অভূতপূর্ব
রহস্যজগত। কিন্তু তারপর আর হাত
বাড়াবার জো নেই। তারপর তুমি
অসীমের মতো, তারপর তুমি ছড়িয়ে
আছো আদিগন্ত, তারপর তুমি চাঁদ-তারা
বা লক্ষ-কোটি গ্রহ-নক্ষত্র-গ্রহাণুপুঞ্জের
মতো, তারপর তীব্র বাতাসের মধ্যে
ঢুকে পড়া হালকা অথচ অনুভূতিতে
দোলা দেওয়া এক পলকা বাতাস,
যাকে কোনোভাবেই তাড়া করা
যায় না, ধরে রাখা যায় না।

তোমাকে হয়তো চিনি ঠিকই, কিন্তু
তোমাকে জানি না। যৎসামান্য চেনার
যে অহঙ্কার, তা ধুলোয় মিশে যায় না
জানার দীনতায়। তোমার রহস্যলোকে
তাই আমার কোনো স্থান নেই; আমি

সেখানে অতিশয় অকিঞ্চিৎকর অস্তিত্ব

এক। তোমাকে হয়তো চিনি ঠিকই, কিন্তু
তোমাকে জানি না, জানি না, জানি না...

Comments